রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই-আগষ্টে শহীদদের ছাড়া আর কারো প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। কালের খবর পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মুরাদনগরে সামাজিক সংগঠনের শীতের কম্বল বিতরণ। কালের খবর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ‘স্বাধীনতা সোপানে’ শ্রদ্ধা নিবেদন। কালের খবর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন। কালের খবর
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন, চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার জীবন সঙ্কটে : চিকিৎসক। কালের খবর

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন, চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার জীবন সঙ্কটে : চিকিৎসক। কালের খবর

কালের খবর প্রতিবেদক  : বাংলাদেশে চিকিৎসার অভাবে বিএনপির কারাবন্দী প্রধান খালেদা জিয়ার জীবন শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক।

দিনের পর দিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় মিসেস জিয়ার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা পূর্ণাঙ্গ স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে বলছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকী।

বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ট্র্যানজিয়েন্ট ইস্‌কেমিক অ্যাটাক (টিআইএ) হয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন গত ৫ই জুন পাঁচ মিনিট সময় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন।

মস্তিষ্কে রক্তচলাচলের সাময়িক বাধার কারণেই এটা হয়ে থাকতে পারে, অধ্যাপক সিদ্দিকী বলেন, কিন্তু টিআইএ-র শিকার রোগীকে যদি দ্রুত বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পরীক্ষানিরীক্ষা এবং চিকিৎসা না করা হয় তাহলে তার স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকে সর্বোচ্চ ৭০%। এবং সেটা যে কোন সময়ে ঘটতে পরে বলে তিনি জানান।

“তার চিকিৎসক হিসেবে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তার শারীরিক পরীক্ষাগুলো না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের উদ্বেগ বা শঙ্কা কাটছে না,” বলছেন অধ্যাপক সিদ্দিকী।

এব্যাপারে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারি সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বিবিসিকে জানান, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত বিষয়টিকে কারা কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব সহকারেই দেখছে। তার জন্য একজন মহিলা ফার্মাসিস্টসহ সার্বক্ষণিকভাবে তিনি নিযুক্ত রয়েছেন।

“যে কোন সময়ে ডাকলে তাকে আমি গিয়ে দেখি। পাশাপাশি অনুমতি সাপেক্ষে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সাথেও শলাপরামর্শ করা হয়,” বললেন ডা. হাসান।

দুর্নীতির মামলায় চারমাস আগে সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে দল-নেত্রীর সুচিকিৎসার দাবি করা হচ্ছে।

এর মধ্যেই জানা যায় যে কারাগারের মধ্যে গত ৫ই জুন দুপর ১টার দিকে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন।

“আমরা তাকে দেখতে গিয়েছিলাম ৯ই জুন। সে সময় বিস্তারিতভাবে তার চেক-আপ করি,” বলছিলেন অধ্যাপক সিদ্দিকী, “সে সময় পেশেন্টের অন্য সব শারীরিক লক্ষণ স্বাভাবিক দেখা গেলেও তার কথা সামান্য জড়িয়ে যাচ্ছিল বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। “

এছাড়া দাঁড়িয়ে থাকার সময় তার তিনি বলেন, তিনি যে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন সেই ঘটনার কথাও খালেদা জিয়া মনে করতে পারছিলেন না।

অধ্যাপক সিদ্দিকী জানান, স্ট্রোকের ঝুঁকির বাইরে, খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস এবং হাইপারটনেশনের শিকার। তার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসও রয়েছে।

কারাগারে তার রক্তচাপের ওপর নিয়মিতভাবে নজর রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সেটাও ঝুঁকির মাত্রা বাড়াচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

“ওনার একটা কন্স্ট্যান্ট পেইন আছে। ঘাড় থেকে বাঁ হাত বেয়ে ব্যথাটা পায়ের দিকে নেমে যায়। এটা একটা নিউরোলজিকাল পেইন। এই ব্যথাটা এতই অসহ্য যে উনি অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকতে পারেন না। “

“এই সমস্যা কিন্তু আগে ছিল না। এই সমস্যা অতিসম্প্রতি তৈরি হয়েছে,” বলছেন তিনি।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিলেও জেল কোড বিধির কথা উল্লেখ করে সরকার প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি (বিএসএমএমইউ) এবং পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এ তার চিকিৎসার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু দুটি প্রস্তাবই বিএনপির তরফ থেকে নাকচ হয়ে যায়।

খালেদা জিয়া বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চাইলেও সরকার তাতে অনুমতি দেয়নি।

ফলে এনিয়ে দু’পক্ষের অনড় অবস্থানের মধ্যে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার প্রশ্নটি আটকা পড়ে আছে।

কিন্তু সিএমএইচ-এর মতো প্রথম শ্রেণির হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে কেন আপত্তি, বিবিসির এই প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার কারণে এখানে একটি আস্থার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

এটা শুধু খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেই না, এই আস্থার প্রশ্নটি অন্য যে কোন রোগীর ক্ষেত্রেই খাটে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

খালেদা জিয়ার অবনতিশীল স্বাস্থ্যের কথা উল্লেখ করে ডা. এফএম সিদ্দিকী জানান, এই মুহূর্তে খালেদা জিয়ার সবচেয়ে যেটা প্রয়োজন তা হলো ডপলার টেস্ট এবং বিশেষ ধরনের এমআরআই – যে মেশিনটি শুধু ইউনাইটেড হাসপাতালে রয়েছে।

কিন্তু কারা কর্মকর্তারা বলছেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের চার পাতার রিপোর্টটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে পাঠানোর পর সেখান থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে প্রস্থেটিক্স-সহনীয় এমআরআই মেশিন ঐ হাসপাতালেই আছে।

খালেদা জিয়াকে তার পছন্দসই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আবু সায়েম এক বিবৃতিতে বলেন,”সরকার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে নিকৃষ্টতম বর্বরতার পরিচয় দিচ্ছে। আইনে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এধরনের আচরণ সভ্য সমাজে অগ্রহণযোগ্য। “

শেষ পর্যন্ত কোন্ হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হতে পারে, এই প্রশ্নটি এখন দু’পক্ষের চিকিৎসকদের আওতার বাইরে চলে গিয়ে রাজনৈতিক আঙ্গিনায় বল চালাচালিতে পরিণত হয়েছে।

এই জটিলতার মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে তার চিকিৎসার জন্য নি:সঙ্গ কারাগারেই অপেক্ষা করতে হবে বলে দৃশ্যত মনে হচ্ছে।

      দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন ।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com